Ads

চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমস: রফতানি-কনটেইনার হ্যান্ডলিং-রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড

চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমস: রফতানি-কনটেইনার হ্যান্ডলিং-রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড
ছবি সংগৃহীত।


নিজস্ব প্রতিবেদক:


নানা প্রতিকূলতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি ও রফতানি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে নতুন রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি পণ্য আমদানি-রফতানিতেও অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে। অপরদিকে কাস্টমস হাউস চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আদায় করেছে। যা দেশের অর্থনীতির জন্য আশাব্যঞ্জক বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্যবসায়ীদের মতে, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কমে আসা, এলসি নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার গতি বৃদ্ধি, ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক বাজারে তৈরি পোশাকসহ রফতানিমুখী পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সাফল্য এসেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের গত পাঁচ অর্থবছরের কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের তথ্যে দেখা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে হ্যান্ডলিং হয়েছে রেকর্ড ৩২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৭ কন্টেইনার, ১৩ কোটি ৭ লাখ ২৪ হাজার ৭৮৩ মেট্রিক টন কার্গো। একই সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে ৪ হাজার ৭৭টি জাহাজ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে হ্যান্ডলিং হয় ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯০ একক কন্টেইনার। একই সময়ে হ্যান্ডলিং হয় ১২ কোটি ৩২ লাখ ৪২ হাজার ৭৪৮ মেট্রিকটন কার্গো। জাহাজ আসে ৩ হাজার ৯৭১টি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে হ্যান্ডলিং হয় ৩০ লাখ ৭ হাজার ৩৭৫ একক কন্টেইনার। ওই বছর ১১ কোটি ৮২ লাখ ৯৭ হাজার ৬৪৩ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং হয়। জাহাজ আসে ৪ হাজার ২৫৩টি।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেকর্ড ৭৫ হাজার ৪৩২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৬৮ হাজার ৭৫৫ কোটি ৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে ৬ হাজার ৬৭৬ কোটি ৩ লাখ টাকা বা ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ। এর আগের বছর ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ৬১ হাজার ৩৫০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মুখপাত্র ও ডেপুটি কমিশনার সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টমস ৭৫ হাজার ৪৩২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে। যা অতীতের যেকোনও সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ। তবে গেলো অর্থবছরটিতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮০ হাজার ৪০২ কোটি টাকা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বছরজুড়ে আমরা বারবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছি– ধর্মঘট, আন্দোলন, পরিবহন বন্ধ। তবু রাজস্ব আদায়ে আমরা ইতিবাচক ধারায় ছিলাম।’
চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমাতে গড়ে উঠেছে ১৯টি বেসরকারি ডিপো। এসব ডিপো দেশের এই প্রধান  সমুদ্রবন্দর দিয়ে রফতানি হওয়া পণ্যের প্রায় শতভাগ, ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্য এবং খালি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে থাকে।
এ বিষয়ে ডিপো মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা) সচিব রুহুল আমিন শিকদার বলেন, ‘গেল বছর রফতানিতে রেকর্ড গড়েছে। যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় সর্বোচ্চ। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কমে আসা, এলসি নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার গতি বৃদ্ধি, ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক বাজারে তৈরি পোশাকসহ রফতানিমুখী পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সাফল্য এসেছে।’
বিকডা’র তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বেসরকারি ডিপোগুলো থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাহাজের মাধ্যমে রফতানি পণ্য বোঝাই কনটেইনার গেছে ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৯৯৪ একক। এর আগের বছর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গেছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ১৩৬ একক কনটেইনার। একইভাবে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিভিন্ন দেশে রফতানি পণ্য গেছে ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৮৬২ একক কনটেইনার। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর এবার কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড গড়েছে। একইভাবে কার্গো পণ্য হ্যান্ডলিংও বেড়েছে অন্যান্য বছরের তুলনায়। এ সাফল্যের পেছনে রয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সরাসরি দিকনির্দেশনা, মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতা, বন্দরের বোর্ড সদস্যদের তদারকি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিকতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চালু করা হয়েছে ই-গেট পাস, অটোমেটেড কনটেইনার অপারেটিং সিস্টেম, আধুনিক স্ক্যানিং ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এইসব ব্যবস্থার ফলে বন্দরে পণ্য খালাস ও ডেলিভারির গতি বেড়েছে, কমেছে কাগজপত্রের জটিলতা। এ ছাড়াও বন্দর ব্যবহারকারীদের সময়মতো ডেলিভারি গ্রহণ, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় এবং অংশীজনদের সহযোগিতাও কার্যক্রমকে গতিশীল করেছে। তবে অর্থবছরের শেষের দিকে এনবিআরের শাটডাউন কর্মসূচি না থাকলে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সংখ্যা ৩৩ লাখ একক ছাড়িয়ে যেত বলে মনে করা হচ্ছে।’
তিনি জানান, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের মধ্যে সমন্বয়, পণ্য খালাসের সময় হ্রাস, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধিও এ অর্জনের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পাশাপাশি বন্দরের ভেতরে ও বাইরে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, রেল ও নৌপথে পণ্য পরিবহনের বিকল্প ব্যবস্থাপনা এ সাফল্যে সহায়ক হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নন প্যাকার ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুব রানা বলেন, ‘ডলার সংকট, এলসি নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ায় কিছুটা গতি বৃদ্ধিসহ দেশে দিন দিন ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে উঠছে। এ কারণে রফতানি দিন দিন বাড়ছে। এখন পর্যন্ত ব্যবসার প্রসারে যেসব সমস্যা আছে সেসব বাঁধা না কাটলে আগামীতে রফতানিতে বাধাগ্রস্ত হতে পারে।’ 
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিএমসিসিআই) সহ-সভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী বলেন, ‘ডলার সংকট এখনও পুরোপুরি কাটেনি। গত অর্থবছরে অবরোধসহ নানা কারণে প্রায় দুই মাস বন্দর-কাস্টমস অচল ছিল। ওই সময় ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য পাঠাতে না পেরে এবং ডেলিভারি নিতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এমনকি বন্দর থেকে সময়মতো পণ্য ডেভিলারি নিতে না পেরে অনেক ব্যবসায়ী চারগুণ বেশি জরিমানা গুনেছেন। যে কারণে ব্যবসায়ীরা এত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়তে সামগ্রিক প্রয়াস প্রয়োজন।’

দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশই হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। দেশের সমুদ্রবন্দর দিয়ে পরিবহন করা পণ্যবাহী কনটেইনারগুলোর প্রায় ৯৮ শতাংশ এ বন্দর দিয়ে পরিবহন করা হয়।
 




Ads

অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত হারে ময়লা সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে

অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত হারে ময়লা সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে
ছবি সংগৃহীত।


চট্টগ্রাম শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে। ইতোমধ্যে নগরের ২৪ ওয়ার্ডে ২৪টি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের মালিক বিএনপি এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। এর মাধ্যমে অন্তত ৪০০ কোটি টাকার ব্যবসা করবে প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে আবার নেই প্রতিষ্ঠানগুলোর তেমন অভিজ্ঞতা। পাশাপাশি ময়লা ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের।


বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সংবাদ সম্মেলন ডাকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)।

এতে প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে বাসাবাড়ি থেকে ডোর-টু-ডোর ময়লা সংগ্রহে দীর্ঘদিন ধরে চলা নৈরাজ্য ও ইচ্ছামতো টাকা আদায় রোধে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। চসিকের নতুন নীতিমালার আওতায় বাসা-বাড়িগুলো থেকে ন্যূনতম হারে সেবামূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বাইরে কাউকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করতে দেওয়া হবে না। ময়লা সংগ্রহে সেবা নিশ্চিতে ৪১টি ওয়ার্ডের জন্য টেন্ডার আহ্বান করে ১৯২টি শিডিউল বিক্রি হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিজ্ঞ ও সক্ষম প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত হারে ময়লা সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।


তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রথমে সতর্কতা, পরে চুক্তি বাতিল পর্যন্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের উদ্দেশ্য নগরবাসীকে একটা সহনীয়, সুশৃঙ্খল ও নিরবচ্ছিন্ন পরিচ্ছন্নতা সেবা দেওয়া।

নগরীতে চলমান জলাবদ্ধতার জন্য বাসাবাড়ি থেকে যত্রতত্র ময়লা ফেলা এবং অপরিকল্পিত আবর্জনা ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ বলেন, ড্রেন পরিষ্কারের পর আবার ময়লা জমে। কারণ, অনেকে জানালা দিয়ে ময়লা ফেলে দেয়। আমরা চাই এই ব্যবস্থাকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে। বর্তমানে কিছু কোম্পানি মসজিদ-মাদরাসা থেকে ২০০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। অথচ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে তাদের কোনো চুক্তি নেই। আরেকটি প্রতিষ্ঠান হাইকোর্টে রিট করেও কিছু এলাকায় তারা কাজ বন্ধ রাখছে। আমরা আইনি পথে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।


তিনি বলেন, নতুন সিস্টেমে প্রতিটি কোম্পানিকে শ্রমিকের বেতন, গাড়ির সংখ্যা ও এলাকা অনুযায়ী সক্ষমতা যাচাই করে অনুমোদন দেওয়া হবে। বিশেষ করে যাদের শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্স আছে, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আমি প্রতিদিন ৩০-৪০টি কল পাই, যেখানে বাসা থেকে ময়লা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়। মানুষ বলছে—টাকা দিচ্ছি, ময়লা নিচ্ছে না। তাই আমরা সঠিক প্রক্রিয়ায় এই সমস্যার সমাধান করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, ইতোপূর্বে প্রায় ২০০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী ডোর-টু-ডোর কাজের জন্য নিয়োগ পেলেও যারা তিন মাস ধরে কাজে আসছেন না, আমরা ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ নীতিতে তাদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং নতুন শ্রমিক নিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছি। অনেক যন্ত্রপাতি ২০-২৫ বছরের পুরোনো। স্কেভেটর বা চেইন ডোজার ভাড়া করে ময়লা সরাতে হচ্ছে। নাগরিকদের সেবায় এই খাতে আরও বরাদ্দ প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি এবং উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা প্রমুখ।


চসিকের প্রধান কাজ ময়লা ব্যবস্থাপনা, সড়ক বাতি ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এজন্য নগরবাসীর কাছ থেকে টাকা আদায় করে চসিক। তারপরও ময়লা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে। যারা নগরবাসীর কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে ময়লা সংগ্রহ করবে। এক্ষেত্রে চসিকের যুক্তি ঘর থেকে ময়লা সংগ্রহ তাদের দায়িত্ব না। তারা নির্দিষ্ট স্থান থেকে ময়লা সংগ্রহ করবে। যদিও ঘর থেকে ময়লা সংগ্রহের জন্য প্রায় ২ হাজার লোক নিয়োগ দিয়েছিল সিটি কর্পোরেশন। এখন আবার নতুন করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া মানে নগরবাসীকে ময়লার জন্য করের টাকার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে টাকা দিতে হবে।




Ads

চট্টগ্রামে স্বৈরাচারের পুনর্জাগরণের চেষ্টা তাহেরের

চট্টগ্রামে স্বৈরাচারের পুনর্জাগরণের চেষ্টা তাহেরের
ছবি সংগৃহীত।

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে নিন্দিত নাম জাতীয় পার্টি। সাবেক সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে দলটি দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থেকে দমন-পীড়নের রাজনীতি চালিয়েছে। বর্তমানে এরশাদের ভাই গোলাম মোহাম্মদ কাদের দলটির চেয়ারম্যান হলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তাকে আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ বলেই চিহ্নিত করছেন। দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে জাতীয় পার্টি সহযোগী ভূমিকা পালন করেছে।
২০২৫ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র ও জনতা দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে। সেই ঘটনার পর থেকে সারাদেশে জাতীয় পার্টির কার্যক্রম কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। এখানেই দলটির কার্যক্রম নতুন করে দৃশ্যমান হচ্ছে, আর সেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সুবিধাভোগী হিসেবে পরিচিত আলহাজ্ব আবু তাহের।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, আবু তাহের মূলত জাতীয় পার্টির ব্যানারে আওয়ামী লীগকে চট্টগ্রামে পুনরায় সংগঠিত করতে সক্রিয় রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের ছায়াতলে থেকে তিনি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করেছেন। এবার জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে তার নিয়োগকে ঘিরে সেই অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে।  
২৬ জুন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে দলের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। চিঠিতে তার সাংগঠনিক দক্ষতার প্রশংসা থাকলেও বাস্তবে চট্টগ্রামে তার ভূমিকা নিয়ে দলের ভেতরে ও বাইরে তীব্র সমালোচনা রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে তিনি দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকলেও, তার বিরুদ্ধে একক আধিপত্য কায়েম, বিরোধী কণ্ঠ দমন এবং নিজের অনুসারীদের বিভিন্ন পদে বসানোর অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই নিয়োগ জাতীয় পার্টির পুনর্গঠনের পরিবর্তে এক ধ্বংসাত্মক নেতৃত্বকে পুরস্কৃত করার সামিল।
চট্টগ্রাম বরাবরই গণতান্ত্রিক চেতনার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেই জায়গায় স্বৈরতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অধিকারী একটি দলকে পুনরায় সক্রিয় করার চেষ্টা অনেকেই ‘গণতন্ত্রের ওপর আঘাত’ হিসেবে দেখছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জাতীয় পার্টি এখনো স্বৈরশাসনের ছায়া থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।
আবু তাহেরপন্থীরা অবশ্য দাবি করছেন, তিনি দলের দুঃসময়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং বর্তমানে সংগঠন পুনর্গঠনের কাজ করছেন বলেই তাকে প্রেসিডিয়াম পদে আনা হয়েছে। কিন্তু তার অধীনে দলীয় কার্যক্রম কতটা গণভিত্তি তৈরি করতে পেরেছে — তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে। বরং দলীয় কোন্দল, নতুন প্রজন্মের অবহেলা এবং অভ্যন্তরীণ অসন্তোষের অভিযোগই বেশি শোনা যাচ্ছে।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেও এখন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে উঠে আসার বিষয়টি অনেকের কাছে ‘রাজনৈতিক প্রতারণা’ বলেই বিবেচিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে আলহাজ্ব আবু তাহেরের মন্তব্য জানতে চাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
 




Ads

পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
ছবি সংগৃহীত।


চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যার দায়ের তার স্ত্রী রিমা আক্তারসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৪ জুলাই) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এইচ এম শফিকুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিতরা হলেন– রিমা আক্তার, শাহাদাত হোসেন কাইয়ুম ও আবদুল কাইয়ুম। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানাসহ তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৯ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ডের তেলিপাড়া এলাকায় জয়নাল আবেদিন (কালা মিয়া) নামক এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তি চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরে ফলের ব্যবসা করতেন। পরকীয়ার জেরে স্ত্রী রিমা আক্তার তার প্রেমিক শাহাদাত হোসেন কাইয়ুমের সহায়তায় স্বামী জয়নাল আবেদিনকে হত্যা করেন। এরপর তারা মরদেহ পুকুরে ফেলে দেন। পরদিন সকালে পুলিশ পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে এবং সীতাকুণ্ড থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর রিমা আক্তার ও শাহাদাত হোসেন কাইয়ুম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ।

চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আফসার উদ্দিন হেলাল বলেন, বিচারিক প্রক্রিয়ায় আদালতে ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।



দৈনিক সাম্পান

Latest News

ক্যাটাগরি