Ads

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ভিডিও ব্যবহার করে সরকারবিরোধী অপপ্রচার

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ভিডিও ব্যবহার করে সরকারবিরোধী অপপ্রচার
ছবি সংগৃহীত।


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়কার ভিডিও ব্যবহার করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর অপচেষ্টা শনাক্ত করেছে দেশের ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান ‘রিউমার স্ক্যানার’।


বাংলাদেশে চলমান গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্য মোকাবিলায় নিয়োজিত রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ দাবিতে মিছিলের ভিডিওটি ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়কার।

রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধান টিম ফ্যাক্ট চেক করে জানায়, ভিডিওটি ২০২৪ সালের কোটা আন্দোলনের সময় ঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির। ওই সময় পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের দৃশ্য এটি।

 


প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, একটি মহল দেশ-বিদেশ থেকে সংগঠিতভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা গুজব, ভুল তথ্য ও অপতথ্য ছড়াচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেকের মাধ্যমে প্রমাণ মিলেছে, গত এক বছর ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম এবং ভারত থেকে পরিচালিত কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারের হার বেড়েছে।


শুধু চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ২৯৬টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার। সূত্র : বাসস




Ads

রামুতে ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশাচালকসহ নিহত ৪

রামুতে ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশাচালকসহ নিহত ৪
ছবি সংগৃহীত।


কক্সবাজারের রামুতে ট্রেনের ধাক্কায় চালকসহ অটোরিকশার ৪ যাত্রী নিহত হয়েছেন। শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার রশিদ নগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রামু থেকে উপজেলার ভারোয়াখালী যাওয়ার পথে রশিদনগর রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকসহ চার যাত্রী নিহত হয়েছেন। নিহত চালকের নাম হাবিবুল্লাহ (৪২)।


রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈয়বুর রহমান জানান, দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুজন নারী এ এক শিশু রয়েছে।




Ads

ভবন নাছির-রেজাউলরা করেছিলেন একতলা, শাহাদাত করবেন ৪ তলা

ভবন নাছির-রেজাউলরা করেছিলেন একতলা, শাহাদাত করবেন ৪ তলা
ছবি সংগৃহীত।


চট্টগ্রাম নগরের ২ নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যান নিয়ে নতুন চুক্তি করেছে সিটি করপোরেশন (চসিক)। এ চুক্তির মাধ্যমে উদ্যানে নতুন স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ পাচ্ছে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। আগের দুই মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও মো. রেজাউল করিম চৌধুরী যেখানে একতলা ভবন নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিলেন, সেখানে বর্তমান মেয়র শাহাদাত হোসেনের নতুন চুক্তিতে উদ্যানে চারতলা ভবন নির্মাণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।


সম্প্রতি চসিক নূর হাফিজ প্রপার্টিজ নামের প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ২৫ বছরের জন্য চুক্তি করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, উদ্যানে বিদ্যমান একতলা স্থাপনাটি বর্ধিত করে চারতলা পর্যন্ত নির্মাণ করা যাবে। দ্বিতীয় তলায় আধুনিক সবুজবান্ধব আরবান লাউঞ্জ, তৃতীয় তলায় ইনডোর গেমসের জন্য কফিশপসহ অবকাঠামো এবং চতুর্থ তলায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে প্রদর্শনী কেন্দ্র নির্মাণের সুযোগ রাখা হয়েছে। উদ্যানে বর্তমানে থাকা ২১টি দোকান ও ২টি শৌচাগার নতুন প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়া হবে।


জানা যায়, ১৯৭৯ সালে ২ নম্বর গেট এলাকায় এক একর জায়গায় বিপ্লব উদ্যান গড়ে তোলা হয়। ২০১৮ সালে তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন উদ্যানটিতে দোকানপাট নির্মাণ শুরু করেন। ২০২৩ সালে এসে তৎকালীন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী উদ্যানটিতে অবকাঠামো নির্মাণে আরেকটি চুক্তি করেছিলেন।

এদিকে, বিপ্লব উদ্যানে নতুন স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছেন। নগরের পরিবেশ ও ইতিহাসের সুরক্ষায় উদ্বেগও প্রকাশ করেন তারা। তাদের বক্তব্য, নগরের সবুজ এলাকা এবং উন্মুক্ত স্থান ক্রমেই সংকুচিত হয়ে বাণিজ্যিকীকরণ হচ্ছে। আগের দুই মেয়রের সময়েও বিপ্লব উদ্যানে একই ধরনের চুক্তি হয়েছিল। তবে এসব চুক্তি বাতিল করতে হয়েছিল আদালতের নির্দেশে। এরপরেও এই নতুন চুক্তি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।


শুধু বিপ্লব উদ্যান নয়। নগরের চান্দগাঁও ও কোতোয়ালি থানার বিভিন্ন ফুটপাত দখল করে অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করে চসিক। সম্প্রতি নগরের কোতোয়ালি থানা কাজির দেউরি আউটার স্টেডিয়াম সংলগ্ন পুলিশ বক্সের পাশের প্রায় ১০০ ফুট ফুটপাত ঘিরে সেখানে নতুন করে নির্মাণকাজ শুরু করেছে সংস্থাটি। যেখানে চসিকের মেয়র আ. জ. ম নাছির উদ্দীন ২০১৮ সালে দোকানপাট বরাদ্দ দিয়েছিলেন। ২০২৩ সালে এসে জেলা প্রশাসন সেগুলো উচ্ছেদ করে দিয়েছিল।

বিপ্লব উদ্যানে নিয়মিত হাঁটতে আসেন জুনায়েদ খান। তিনি বলেন, আমি এখানে নিয়মিত হাঁটতে আসি। এমনিতে এখানে দোকানপাট নির্মাণ করে পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। এখন  চারতলা বাণিজ্যিক ভবন তৈরি করা খুবই হতাশাজনক। উদ্যানে হাঁটার জন্য যে শান্ত পরিবেশ ছিল, তা যদি হারিয়ে যায়, তাহলে কই যাবো আমরা? সিটি করপোরেশনকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের মতামত নেওয়ার উচিত ছিল। শহরে আমাদের বিশ্রামের জায়গা খুবই প্রয়োজন। সবুজ উদ্যানগুলো যদি শুধু বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করা হয়। তাহলে শহরের মানুষের জন্য বেঁচে থাকার স্পেসই তো থাকবে না!

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন পদে চেহারা পরিবর্তন হয়েছে। বাস্তবে কোনো পরিবর্তন হয়নি। আগের লোকেরাও অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে, এখনো হচ্ছে। এটি দুঃখজনক। চসিকের শীর্ষ পদে যিনি আছেন, তিনি ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর বসেছেন। এত লোকের প্রাণহানির পর যিনি পদে বসেছেন, তার প্রতি জনগণের অনেক প্রত্যাশা। বিপ্লব উদ্যানে স্থাপনার অনুমতি দেওয়া, বাণিজ্য করার সুযোগ দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

চুক্তির বিষয়ে জানতে ডা. শাহাদাত হোসেন কানাডা সফরে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিপ্লব উদ্যানে খোলা স্থানে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। আগের যে জায়গায় দোকান রয়েছে, সেখানে স্থাপনা করতে হবে। এ জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অনুমতি নিতে হবে।




Ads

হঠাৎ অস্থির চালের বাজার

হঠাৎ অস্থির চালের বাজার
ছবি সংগৃহীত।

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান খাদ্যপণ্য চাল। দেশের আপামর মানুষ প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যে খাদ্যটি অবিচ্ছেদ্যভাবে গ্রহণ করে, তা হলো ভাত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের বাজার পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, সাধারণ মানুষের সেই মৌলিক চাহিদাটিই আজ হুমকির মুখে পড়েছে। ভরা মৌসুমেও চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতা, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণি। প্রতিবছর বোরো মৌসুমে নতুন চাল বাজারে আসে এবং তখন চালের দাম কিছুটা কমে যায়—এটাই ছিল স্বাভাবিক চিত্র। কিন্তু এবার সে ধারার ব্যতিক্রম দেখা গেছে। রাজধানীসহ সারা দেশের বাজারে চালের দাম কেজিপ্রতি ২ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কোথাও কোথাও এই বৃদ্ধি ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। এটি নিঃসন্দেহে অস্বাভাবিক এবং উদ্বেগজনক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার নতুন চাল বাজারে আসার পরও এই মূল্যবৃদ্ধি বাজার ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের ত্রুটি এবং ব্যবসায়ী কারসাজিরই প্রমাণ। চালের এমন দাম বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ এবং শ্রমজীবী শ্রেণি। প্রতিদিনের ন্যূনতম খাবারের তালিকায়ও সংকট দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে। একজন রিকশাচালক জলিল মিয়া বলেন, “আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ নিয়মিত মাছ-মাংস খেতে পারি না। চারটা ডাল-ভাত হলেই হয়। এখন সেই ভাতেই হাত দিল তারা। আমরা কি খেয়ে বাঁচবো বলেন?” এই কথাগুলোর মধ্য দিয়েই ফুটে ওঠে একজন সাধারণ নাগরিকের অসহায়ত্ব ও ক্ষোভ। চালের বাজারে মূল সমস্যা হিসেবে উঠে এসেছে একটি কথাই—সিন্ডিকেট। চালকল মালিক, পাইকারি ব্যবসায়ী ও কিছু কর্পোরেট মিল মালিকদের এক ধরনের অপারদর্শী সমন্বয়ের মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যাত্রাবাড়ীর চাল ব্যবসায়ী রহিম হাওলাদার বলেন, “মিল মালিকদের সিন্ডিকেটের কবলে চালের বাজার। তারা যেভাবে দাম বাড়ায়, আমাদের সে দামে কিনতে হয়। বাধ্য হয়ে আমরাও বেশি দামে বিক্রি করি।” এমন মন্তব্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, খুচরা বিক্রেতারাও অনেক ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের হাতে বন্দি। রাজধানীর শনিরআখড়ার বাজারে এখন খুচরা দরে মোটা চাল (২৮ চাল) বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে। জিরাশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭৪ থেকে ৮০ টাকা, মিনিকেট ৭৬ থেকে ৮৪ টাকা এবং কাটারিভোগ ৭০ থেকে ৭৬ টাকা কেজি। অথচ কিছুদিন আগেই সরু চালের দাম ৭৫ টাকায় নেমে এসেছিল। মিলাররা দাবি করছেন, তারা বেশি দামে ধান কিনছেন বলে চালের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, মূল সমস্যা হচ্ছে বাজারে সরকারের কার্যকর তদারকির অভাব এবং বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ। খুচরা ও পাইকারি দোকানে লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করা হলেও মূল উৎস—মিল ও মোকামে কোনো কার্যকর নজরদারি নেই। ফলে ব্যবসায়ীরা মজুত নীতিমালার তোয়াক্কা না করে ধান ও চাল মজুত করে বাজারে কৃত্রিম ঘাটতির পরিস্থিতি তৈরি করছেন। এতে নিত্যপণ্যের বাজারে নেমেছে চরম অস্থিরতা, যার বড় অংশের ভার এসে পড়েছে সাধারণ জনগণের ঘাড়ে। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, “ভরা মৌসুমেও চালের দাম বেড়ে যাওয়া নজিরবিহীন। মোকাম এবং আড়তগুলোতে চাল মজুত থাকা সত্ত্বেও দাম বাড়ানো হচ্ছে। কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার পর মিলার ও কর্পোরেটরা অজুহাত খাড়া করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।” তিনি আরও বলেন, “সরকার মাঝে মাঝে খুচরা ও পাইকারি বাজারে তদারকি করে ঠিকই, কিন্তু মোকাম বা মিল পর্যায়ে কোনো নজরদারি করে না। ফলে সিন্ডিকেট কার্যত নিয়ন্ত্রণ করছে পুরো বাজার।” ভোক্তাদের অনেকেই অভিযোগ করছেন, সরকারের খাদ্য বিভাগ বা জেলা প্রশাসন চালের বাজার তদারকিতে কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে না। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের দায়িত্ব শুধুই চাল সংগ্রহ করা, বাজার মনিটরিং নয়। এতে করে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতায় কোনো লাগাম টানা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা আগের সরকারের সময়ও চালের সিন্ডিকেট নিয়ে প্রতিযোগিতা কমিশনে অভিযোগ করেছিলাম, মামলাও হয়েছে। কিন্তু আজও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সরকার চাইলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, কিন্তু করছে না। প্রতিযোগিতা কমিশনও নিষ্ক্রিয়। একটি গোষ্ঠী চালের বাজারের ৩২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে—তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।” এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে চালের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে জনসচেতনতা গড়ে উঠতে শুরু করেছে। ‘ভাতের পাতে স্বস্তি ফেরাও’ স্লোগানে চট্টগ্রামে নাগরিক সমাজ, খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি), ক্যাব চট্টগ্রাম ও আইএসডিই বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন করেছে। তাঁরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, বাজারে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে যদিও টিসিবি ও খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে স্বল্পদামে চাল বিক্রির উদ্যোগ আছে, তবে তা অত্যন্ত সীমিত পরিসরে। অধিকাংশ ভোক্তা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখোমুখি। যে দেশে কৃষক প্রতি বছর লাখ লাখ টন ধান ফলায়, সেই দেশে চালের জন্য সাধারণ মানুষকে হাহাকার করতে হবে—এমন চিত্র কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাজারে যদি চালের সংকট না থাকে, তাহলে দাম কেন বাড়ছে—এই প্রশ্নের উত্তর চাইছে জনগণ। বাস্তবতা হচ্ছে, চালের দাম এখন আর ফসল ফলনের ওপর নির্ভর করে না, বরং নিয়ন্ত্রণ করছে একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী। খাদ্য অধিদপ্তরের কাছে পর্যাপ্ত চাল মজুত থাকার পরও বাজারে এর সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না। এর মানে হচ্ছে, সরকারের ভিতরে কিংবা বাইরের কোনো শক্তি এই প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করছে এবং বাজার ব্যবস্থাপনার ঘাটতির সুযোগ নিচ্ছে। এই অবস্থায় বাজার ব্যবস্থাপনায় যে সংস্কার প্রয়োজন, তা শুধু প্রশাসনিক উদ্যোগ নয়—রাজনৈতিক সদিচ্ছাও অপরিহার্য। সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে সরকারকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক উভয় স্তর থেকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। নিয়মিত মনিটরিং, মজুতকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, মিল পর্যায়ে নজরদারি এবং বাজার ব্যবস্থার ডিজিটালায়ন ছাড়া এই সমস্যা নিরসন সম্ভব নয়। অন্যথায়, চালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের বাজারেও একই ধারা অব্যাহত থাকবে, যা দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলবে। একটি গণতান্ত্রিক ও জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্রের জন্য এটা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য নয়।

 



দৈনিক সাম্পান

Latest News

ক্যাটাগরি